বৃক্ষরােপণ সপ্তাহ পালনের প্রয়ােজনীয়তা উল্লেখ করে বন্ধুর নিকট একটি পত্র রচনা কর।
প্রিয় আলম,
শুভেচ্ছা ও ভালােবাসা নিও। আশা করি ভালাে আছ। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালাে আছি। গতকাল তােমার একটি চিঠি পেয়েছি। এতে বৃক্ষরােপণ সপ্তাহ’ পালনের প্রয়ােজনীয়তা সম্পর্কে তুমি জানতে চেয়েছ।
সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়ােজন মুক্ত ও বিশুদ্ধ বাতাস। বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য প্রয়ােজন দূষণমুক্ত পরিবেশ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রয়ােজন সবুজ বৃক্ষের। মানুষের প্রয়ােজন ও সভ্যতার উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিনিয়তই মানুষ নিধন করছে বৃক্ষ, উজাড় হচ্ছে বন। ফলে পরিবেশ তার ভারসাম্য হারাচ্ছে। মানুষ ও জীবজন্তু শ্বাস-প্রশ্বাসে গ্রহণ করে অক্সিজেন, আর ত্যাগ করে কার্বন ডাই-অক্সাইড। কিন্তু সবুজ বৃক্ষ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এ প্রাকৃতিক নিয়মের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য প্রয়ােজন বৃক্ষরােপণের। সভ্যতা ও উন্নয়নের ফলে সৃষ্টি হচ্ছে কলকারখানা ও রাস্তায় চলাচল করছে অধিক হারে যানবাহন। কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়ায় বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হ্রাস পাচ্ছে বাতাসের ওজোনস্তর। সৃষ্টি হচ্ছে গ্রিনহাউস এফেক্ট। মানবসমাজে ঘটছে স্বাস্থ্যহানি ও নানা রােগব্যাধি। অন্যদিকে বায়ুস্তরের গ্যাসীয় পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঘূর্ণিঝড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধিক পরিমাণ বৃক্ষরােপণ করলে বাতাসে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ হবে। প্রকৃতির ভারসাম্য ফিরে আসবে। পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকবে।
এছাড়া মানবসমাজের নিত্যপ্রয়ােজনীয় সামগ্রীর মধ্যে জ্বালানি উল্লেখযােগ্য। বাংলাদেশের জ্বালানির চাহিদা সিংহভাগ পূরন করা হয় বৃক্ষের মাধ্যমে। তাই বর্তমানে যে হারে বৃক্ষ কাটা হচ্ছে, ভবিষ্যতে অধিক চাহিদা মেটানাের জন্য প্রয়ােজন আরও অধিক বৃক্ষরোপণ। অন্যদিকে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে কাঠ বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। কাঠের মাধ্যমে আমরা বাড়িঘর, আসবাবপত্রসহ নিত্যপ্রয়ােজনীয় সামগ্রী প্রস্তুত করে থাকি। বর্তমান চাহিদার জন্য আমরা বৃক্ষ কাটছি। ভবিষ্যৎ চাহিদা আরও বেশি। সুতরাং প্রয়ােজন অধিক হারে বৃক্ষরােপণ।
মুক্ত পরিবেশ সংরক্ষন ও ভবিষৎ চাহিদা পূরণের কথা চিন্তা করে পালন করা হয় বৃক্ষরােপণ সপ্তাহ। আমাদের সকল নাগরিকের উচিত ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য মুক্ত পরিবেশ ও দূষণমুক্ত পরিবেশ ও সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে বৃক্ষরােপণ সপ্তাহ’ সফল করা।
আজ আর নয়। তােমার চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
ইতি-
তােমার বন্ধু
মেহেদী।
Comments
Post a Comment