Skip to main content

প্রকৃতির ওপর আধিপত্য নয়, চাই প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রীর সম্বন্ধ - ভাব-সম্প্রসারণ কর

প্রকৃতির ওপর আধিপত্য নয়, চাই প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রীর সম্বন্ধ। 

ভাব-সম্প্রসারণ  :

প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক নিবিড় ও গভীর। প্রকৃতি মানুষের চিরন্তন বন্ধু। আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রকৃতিই মানুষকে খাদ্য ও আশ্রয় দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে। প্রকৃতিকে দেখে মানুষ নানা কিছু শিখেছে, আবিষ্কার করেছে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি, সাহায্য-সহযোগিতা, মায়া মমতা-ভালোবাসা প্রভৃতি মানুষ প্রকৃতির কাছ থেকেই শিখেছে। ক্রমশ মানুষ সচেতন হয়েছে, নিজের শক্তি ও সম্ভাবনা সম্পর্কে জেনেছে। সত্য, ন্যায় ও সুন্দরকে ধারণ করতে শিখেছে, ক্রমশ গড়ে তুলেছে সভ্যতার নতুন নতুন সোপান। প্রকৃতির অকৃপণ দান গ্রহণ করে এবং নানা উপাদান কাজে লাগিয়েই মানুষ নিজেকে নির্মাণ করেছে সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে। ষের অস্তিত্ব ও বিকাশ প্রকৃতির অনুগ্রহেরই দান। এমন উপকারী ও ত্যাগী বন্ধুর সঙ্গে কোনো বিরোধ বা শত্রুতা করা নিতান্তই অন্যায় কাজ। আমাদের টিকে থাকার স্বার্থে প্রকৃতির সঙ্গে গভীর ও চিরন্তন মৈত্রীর সম্পর্ক অব্যাহত রাখাই কর্তব্য।

আধিপত্য শব্দটি জোর-জবরদস্তিরই নামান্তর। এর লক্ষ্য যদি যথার্থ উপকার বা কল্যাণ হয় তাহলে তা অবশ্যই সাদরে গ্রহণযোগ্য। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হয় অকল্যাণ বা ধ্বংসের উৎস, চূড়ান্ত ক্ষতির কারণ। কারণ আধিপত্যের পেছনে সক্রিয় থাকে মানুষের অফুরন্ত লোভ লালসা, হিংসা, স্বার্থপরতা, নীচ মানসিকতা। আধিপত্য কেবল হত্যা, লুটপাট, ধ্বংসকেই উস্কে দেয়। অতীত ইতিহাস আর বর্তমান ঘটনাবলি তারই সাক্ষ্য দেয়। নির্বোধ, অপরিণামদর্শী মানুষ প্রকৃতিকে কাজে লাগাতে গিয়ে ধ্বংস করছে। নির্বিচারে গাছ কেটে বৃক্ষ-নিধন করে সবুজ প্রকৃতিকে নষ্ট করছে। রুপালি নদী-জলাশয়, উর্বর মাটি পরিবর্তিত হচ্ছে। মানুষ বায়ুদূষণ ঘটিয়ে পৃথিবীর ছাদ 'ওজোন স্তর’ নষ্ট করছে। ফলে প্রকৃতির প্রধান উপাদানগুলোর আন্তসম্পর্কে চিড় ধরেছে। বিনষ্ট হচ্ছে জীবজগতের আন্তসম্পর্কর ভারসাম্য। এসব কারণে হারিয়ে যাচ্ছে নানা প্রজাতির গাছ পালা, পশু-পাখি, নদী, পাহাড় এর প্রভাব বিপর্যস্ত হচ্ছে মাটি, পানি ও বায়ু।

অন্যদিকে যুদ্ধ-বিগ্রহ, পারমাণবিক বিস্ফোরণ, উপগ্রহ উৎক্ষেপণ, নানা যন্ত্র ও প্রযুক্তির ব্যবহার পৃথিবীকে অস্থির করে তুলেছে। আর এসবের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়ছে প্রকৃতির ওপর। প্রকৃতির ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে তা বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে মানুষেরই কাছে। মানুষ নিজেই নিজের অজান্তে তার বড় ক্ষতি করছে।

আজ প্রকৃতির অস্তিত্ব বিপন্ন। যে প্রকৃতি মানুষকে সবকিছু দিয়েছে, আজও দিয়ে চলেছে, সেই প্রকৃতিকে মানুষ ভয়ংকর করে তুলেছে। প্রকৃতির ওপর এই আধিপত্য ও আগ্রাসন বন্ধ না করলে একসময় এই সুন্দর প্রকৃতি বিরূপ হয়ে উঠবে। তখন মানুষই হবে প্রকৃতির নির্মম শিকার। এ কারণে প্রকৃতি ধ্বংস না করে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। তাই প্রকৃতির ওপর আধিপত্য নয়, প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রী গড়ে -তোলাই মানুষের জন্য কল্যাণকর।

Comments

Popular posts from this blog

নলকূপ স্থাপনের জন্য আবেদন

তারিখ : ১৭/০২/২০১৪ ইং বরাবর চেয়ারম্যান, ৬নং দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ। হােমনা, কুমিল্লা। বিষয় : নলকূপ স্থাপনের জন্য আবেদন। জনাব, যথাযথ সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমরা আপনার ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের অধিবাসী। আমাদের গ্রামটি একটি জনবহুল ও বর্ধিষ্ণু গ্রাম। এ গ্রামের লােকসংখ্যা প্রায় দুই হাজার। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, এ গ্রামে পানীয় জলের তেমন সুব্যবস্থা নেই। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত গ্রামের একমাত্র নলকূপটি দীর্ঘদিন যাবত পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। গ্রামে যে দু-চারটি হাজা-মজা পুকুর আছে, সেগুলােও আবর্জনা ও জঞ্জালে পিরপূর্ণ। এমনকি, ফাল্গুন-চেত্র মাসে এগুলোও শুকিয়ে যায়। ফলে গ্রামবাসীদের পানির অভাবে দুঃখের সীমা থাকে না। নিতান্ত বাধ্য হয়ে নদী ও ডােবা থেকে সংগৃহীত দূষিত পানি পান করার ফলে প্রতি বছরই কলেরা, টাইফয়েড, আমাশয় ইত্যাদি মারাত্মক রােগে আক্রান্ত হয়ে এ গ্রামের বহুলােক অকালে মৃত্যুবরণ করে। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন, অনতিবিলম্বে উক্ত গ্রামে অন্তত তিনটি নলকুপ স্থাপন করে জনজীবনে শান্তি ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে মর্জি হয়। বিনীত নিবেদক গ্রামবাসীর প...

তরুতলে বসে পান্থ শ্রান্তি করে দূর - সারমর্ম

তরুতলে বসে পান্থ শ্রান্তি করে দূর, ফল আস্বাদনে পায় আনন্দ প্রচুর। বিদায়ের কালে হাতে ডাল ভেঙ্গে লয়, তরু তবু অকাতর, কিছু নাহি কয়। দুর্লভ মানব জন্ম পেয়েছ যখন, তরুর আদর্শ কর জীবনে গ্রহণ। পরার্থে আপন সুখ দিয়ে বিসর্জন, তুমিও হওগাে ধন্য তরুর মতন। সারমর্ম : অপরের কল্যাণে নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিলিয়ে দেয়ার মধ্যেই মানব। জীবনের প্রকৃত সার্থকতা। মহৎ হৃদয়ের অধিকারীরা অন্যের জন্য জীবনের সর্বস্ব বিলিয়ে। দিতে কণ্ঠাবােধ করেন না। দর্লভ মানব জন্য তাদের সার্থক হয় পরহিত ব্রতে নিজকে উৎসর্গের মধ্য দিয়ে। যেমনটি গাছ করে থাকে। মানুষেরও উচিত গাছের আদর্শ অনুসরণ করে পরার্থে নিজেকে বিলিয়ে দেয়া।

A Letter Describing the Importance of Co-Curricular Activities

❝ A Letter/E-Mail to Your Friend Describing the Importance of Co-Curricular Activities in Later Life ❞ Dear AXIE, I hope this letter finds you in sound health and upbeat spirits. I am writing to you to advise you to take part in co-curricular and extracurricular activities enthusiastically. There is no doubt you are a great student with an excellent academic record, but this is not the end result of education. The core aim of education is to foster all-round development of a child. All round development essentially means intellectual, physical, moral, sensible and social development. One must develop all sides of one’s personality. You should take part in co-curricular and extracurricular activities at our school to develop your latent talents and skills which were otherwise hidden inside you. These activities will make you physically and mentally strong. They’ll add the confidence to your personality. Excellence in these activities is in great demand in the corporate world. Again, i...